OrdinaryITPostAd

কৃমি হওয়ার কারণ, লক্ষণ , প্রতিকার এবং কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়

কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল । বিভিন্ন কারণে আমাদের পেটে কৃমি হয়ে থাকে । তাই এই পোস্টটিতে আমরা কৃমি হওয়ার কারণ , লক্ষণ ,প্রতিকার এবং কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি । আপনি যদি কৃমি হওয়ার কারণ ,লক্ষণ , প্রতিকার এবং কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে পোস্ট পড়ুন ।
কৃমি  হওয়ার কারণ, লক্ষণ , প্রতিকার এবং কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়কৃমি মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর । আমাদের শরীরে কৃমি সংক্রমণ বেশি হলে অনেক সময় তা বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । কৃমি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি ।

পেজ সূচিপত্র ঃ কৃমি হওয়ার কারণ, লক্ষণ , প্রতিকার এবং কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় 

  • কৃমির প্রকারভেদ
  • কৃমি হওয়ার কারণ
  • কৃমি হওয়ার লক্ষণ
  • কৃমি হওয়ার প্রতিকার
  • কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • শেষ কথা

কৃমির প্রকারভেদ

কৃমি হলো এক ধরনের পরজীবী যা অন্ত্রে বাস করে । সাধারণত বেশ কয়েক ধরনের কৃমি আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে । কৃমির জাত এবং ধরনভেদে আঁকার আকৃতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে । যেমন গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, বক্র কৃমি, সুতা কৃমি ইত্যাদি ।

কৃমি হওয়ার কারণ

বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরে কৃমি হতে পারে । আসুন জানা যাক কি কারণে আমাদের শরীরে কৃমি হতে পারে ।

অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার ঃ অস্বাস্থ্যকর এবং খোলামেলা টয়লেট ব্যবহার করলে কৃমি হতে পারে । অপরিষ্কার নোংরা জায়গায় সাধারণত কৃমি ডিম পেড়ে থাকে । তাই অস্বাস্থ্যকর নোংরা টয়লেট ব্যবহার করলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

টয়লেট ব্যবহারের পর ভালোভাবে হাত না ধোয়া ঃ কেউ যদি টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান ,ছাই বা মাটি দিয়ে ভালোভাবে হাত না ধোয় তাহলে তার পেটে কৃমি হতে পারে ।

হাতের নখ বড় রাখা ঃ হাতের নখ বড় রাখলে তার মধ্যে বিভিন্ন ময়লা এবং কৃমির ডিম আটকে থাকতে পারে । পরবর্তীতে হাত মুখে দিলে তা পেটে চলে গিয়ে কৃমি হতে পারে ।

গরুর মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে না খাওয়া ঃ গরুর মাংস যদি ভালোভাবে সিদ্ধ করে না খাওয়া হয় তাহলে হতে পারে । কারণ গরুর মাংসের মধ্যে কৃমির ডিম থাকতে পারে ।

বাড়িঘর নোংরা রাখা ঃ কৃমি সাধারণত অপরিষ্কার নোংরা জায়গায় বসবাস করে এবং ডিম পেড়ে থাকে । সুতরাং আমাদের ঘরবাড়ি যদি নোংরা থাকে তাহলে কৃমি সেখানে ডিম পারবে এবং তার মাধ্যমে আমরা কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারি ।

শাকসবজি ভালোভাবে না ধুয়ে রান্না করা ঃ শাক সবজির মধ্যে কৃমির ডিম থাকতে পারে । তাই শাকসবজি ভালোভাবে না ধুয়ে খেলে কৃমি হতে পারে ।

খালি পায়ে হাটা ঃ কেউ যদি নোংরা পরিষ্কার জায়গায় খালি পায়ে হাটে তাহলে সেই ব্যক্তি কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে ।

খালি পায়ে টয়লেটে যাওয়া ঃ স্যান্ডেল ছাড়া খালি পায়ে টয়লেটে গেলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

ময়লা পানি পান করা ঃ কৃমি ময়লা অপরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়তে পারে । আর এই অপরিষ্কার পানি পান করলে পেটে কৃমি হতে পারে ।

কৃমি হওয়ার লক্ষণ

কারো পেটে যদি কৃমি হয় তাহলে বেশ কিছু লক্ষণের মাধ্যমে তা বোঝা যেতে পারে । চলুন জেনে নেই কৃমি হওয়ার লক্ষণ সমূহ ঃ

রক্তস্বল্পতা ঃ রক্তস্বল্পতা কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ । কারো শরীরে কৃমি থাকলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিবে শরীর ফ্যাকাস হয়ে যাবে ।

বমি বমি ভাব ঃ শরীরে কৃমি বাসা বেধে থাকলে বমি বমি ভাব হবে এবং বমিও হতে পারে । অতিরিক্ত থুতু আসা ও কৃমি হওয়ার লক্ষণ ।

ক্লান্ত অনুভব হয় ঃ পেটে কৃমি হলে শরীর সবসময় ক্লান্ত অনুভব হবে ,দুর্বল লাগবে ।

পেট ব্যাথা ঃ অনেক কারণে আমাদের পেট ব্যাথা হতে পারে তবে পেটে কৃমি হলেও পেট ব্যাথা হতে পারে । পেটে সব সময় একটা অস্বস্তি ভাব হবে ।

ডায়রিয়া ঃ পেটে কৃমি হলে অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে । তাই ডায়রিয়া হওয়া কৃমি হওয়ার একটা লক্ষণ ।

ওজন কমতে থাকা ঃ কৃমি আক্রান্ত ব্যক্তির ওজন দিন দিন কমতে থাকবে । অন্য কোনো কারণ ছাড়া ওজন কমা কৃমি হওয়ার লক্ষণ ।

মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি ঃ গুড়া কৃমির সংক্রমণ হলে মলদ্বারের চারপাশে চুলকাতে থাকে । এটা গুড়া কৃমি হওয়ার লক্ষণ ।

ক্ষুধা মন্দা ঃ পেটে কৃমি হলে ক্ষুধা মন্দা হবে কিছু খেতে ভালো লাগবে না সব সময় পেট ভরা ভরা অনুভব হবে ।

পুষ্টিহীনতা ঃ কৃমি আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিবে । যার ফলে ওই ব্যক্তি পুষ্টিহীনতায় ভুগতে থাকবে ।

কৃমি হওয়ার প্রতিকার

কৃমি আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে আমরা যদি সচেতন হই এবং প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি তাহলে কৃমি হতে বাঁচতে পারে । আসুন তাহলে জেনে নেই কি কি প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা কৃমি হতে বাঁচতে পারি

  • টয়লেট সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । অপরিষ্কার বা খোলামেলা টয়লেট ব্যবহার করা যাবে না ।
  • টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান, ছাই বা মাটি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করতে হবে ।
  • হাতের নখ সবসময় কেটে পরিষ্কার রাখতে হবে । হাতের নখ বড় রাখা যাবে না ।
  • গরুর মাংস সহ যে কোন প্রকারের মাংস খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিপূর্ণভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে । আধা সিদ্ধ মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।
  • ফলমূল শাকসবজি সব সময় ভালোভাবে ধুয়ে খেতে হবে । শাকসবজি ভালোভাবে না ধুয়ে খাওয়া যাবে না ।
  • ঘরবাড়ি সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । অপরিষ্কার স্যাতসেতে রাখা যাবে না । কারণ অপরিষ্কার নোংরা জায়গায় কৃমি বসবাস করে ।
  • নোংরা অপরিষ্কার জায়গায় কিছুতেই খালি পায়ে হাটা যাবে না । কারণ খালি পায়ে হাঁটলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
  • খালি পায়ে টয়লেটে যাওয়া যাবে না । সব সময় জুতা বা স্যান্ডেল পড়ে টয়লেটে যেতে হবে ।
  • সব সময় বিশুদ্ধ এবং পরিষ্কার পানি পান করতে হবে ।
  • বছরে অন্তত দুইবার কৃমিনাশক ঔষধ খেতে হবে । ছয় মাস পর পর কৃমিনাশক ঔষধ খেতে হবে ।

কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়

কৃমির ঔষধ খাওয়া ছাড়াও বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে কৃমি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেই কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়গুলি ঃ

  • সকাল বেলা খালি পেটে দুই থেকে তিন কোয়া কাঁচা রসুন সাত দিন খেলে কৃমির সংক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে ।
  • পেটের যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে আদা অত্যন্ত কার্যকরী । তাই আদা রস করে কিংবা কয়েক টুকরো আদা চিবিয়ে খেলে পেটের কৃমি দূর হয় ।
  • কাঁচা হলুদ এক চা চামচ রস করে তাতে সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমি মারা যায় ।
  • নিম পাতা বেটে রস করে সকালে খালি পেটে এক চামচ করে কয়েক দিন খেলে পেটের কৃমি শেষ হবে ।
  • লবঙ্গ একটি জীবাণুনাশক মসলা । লবঙ্গ খেলে পেটের বিভিন্ন জীবাণু এবং কৃমি ধ্বংস হয় । দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ মুখে নিয়ে আয় চিবিয়ে খেতে পারেন । তাছাড়াও কয়েকটি লবঙ্গ পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি সারাদিন অল্প অল্প করে খেলেও কৃমি মারা যায় । এভাবে কয়েকদিন খেতে পারেন ।
  • আপেল সিডার ভিনেগার পেটের কৃমি ধ্বংস করতে পারে । তাই খাওয়ার আগে কয়েকদিন আপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারেন ।
  • গাজর কৃমি তারাতে সক্ষম । গাজর খেতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি । নিয়মিত কয়েক দিন কাচা গাজর খেলে কৃমি দূর হয়ে যাবে ।

শেষ কথা

কৃমি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি । আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন । আরও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪